২০/০৫/২০২৫ ইং
Home / X-Clusive / দূষণের বিরুদ্ধে যত আইন আছে, তার প্রয়োগ দরকার

দূষণের বিরুদ্ধে যত আইন আছে, তার প্রয়োগ দরকার

🕒 পরিবেশ ☰ শনিবার ২৬ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

✒️নিজস্ব প্রতিবেদক | নিউজ ডেস্ক- তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর | পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরে (২০১৫ সাল) বিশ্বব্যাপী ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ দূষণের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় বেশির ভাগ মৃত্যু ঘটেছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। ওই সব দেশে প্রতি চার জনে একজন পরিবেশ দূষণ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দূষণ থেকে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে বাংলাদেশে। তালিকায় এরপর আছে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখনো এ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে প্রতি ছয়জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে একজনের মৃত্যু ঘটছে পরিবেশ দূষণের কারণে। বাংলাদেশ ও সোমালিয়ায় মোট মৃত্যুর প্রায় ২৮ শতাংশ পরিবেশ দূষণ জনিত রোগের কারণে হয়। পরিবেশ দূষণ বলতে বায়ু, পানি ও মাটি এবং কর্মক্ষেত্রে দূষিত পরিবেশের কথা বলা হয়েছে। পরিবেশ দূষণের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। দূষণ জনিত মৃত্যুতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা বায়ু দূষণের, যা মোট মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। প্রতি বছর বায়ু দূষণের কারণে ৬৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

গবেষকরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চেয়ে পরিবেশ দূষণ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা নানা দিক দিয়ে মানব জাতির স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর একটি গভীর ও বিস্তৃত হুমকি। বায়ু দূষণের পরই পানি দূষণের অবস্থান। প্রতি বছর প্রায় ১৮ লাখ মানুষ পানি দূষণ জনিত রোগে ভুগে মারা যান। কর্মক্ষেত্রে দূষণ ৮ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী।

পরিবেশ ও জীবন একে অপরের পরিপূরক। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে অব্যাহত থাকে জীবন চক্র। তবে মানুষের জীবন চক্রে গৃহপালিত প্রাণির রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আবার প্রাণিদেরও বেঁচে থাকতে নির্ভর করতে হয় পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ওপর। পরিবেশের বিপর্যয় মানে জীবনের বিপর্যয়। প্রাণিস্বাস্থ্য, প্রাণি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন একটি আন্তঃসম্পর্কিত জটিল প্রক্রিয়া, যার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে রোগের প্রাদুর্ভাব, উৎপাদন ব্যবস্থাসহ আরও অনেক কিছু।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈরী জলবায়ুর করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে না বাংলাদেশও। এর পাশাপাশি যোগ হয়েছে পরিবেশ দূষণ। দূষণের দোষে দূষিত হয়ে উঠছে চারপাশ। শিল্প বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য, প্রাণিজ এবং অন্যান্য বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জীব বৈচিত্র্যের ওপর। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গৃহপালিত প্রাণি। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে চারণ ভূমির অভাবে প্রাণি খাদ্যের অভাব হচ্ছে, তাপ জনিত, ভেক্টরবাহিত এবং সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফলে প্রাণি সম্পদ উৎপাদন হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। অতি বৃষ্টি, উচ্চতাপমাত্রা এবং খরার ফলে মানুষের অজান্তেই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক শক্তিশালী ভাইরাস। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণির জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, ভেক্টর প্রভাবিত এবং খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা রোগ হয়ে থাকে। নদীর এক কূল ভেঙে গড়ে উঠছে আরেক কূল। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন পরিবেশ, যা অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জন্য বাসযোগ্য হয়ে ওঠে না।

প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা জরুরি। প্রকৃতি ও পরিবেশের মাঝেই বিচিত্র জীবনের বিকাশ ঘটে। পরিবেশের জন্যই মানুষ ভাল মন্দ হয়। পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজন শান্তিময় সুস্থ পরিবেশ। বেঁচে থাকার জন্য যে পরিবেশের প্রয়োজন, সে পরিবেশ নানা কারণে জটিল আকার ধারণ করেছে।

সামপ্রতিককালে বিশ্বব্যাপী দূষণের মাত্রা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তাই বিশ্বব্যাপী মানুষ আজ পরিবেশ দূষণের বিরূদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে। দূষিত বাতাস আমাদের জন্য কতো ক্ষতিকর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নানা রকম রোগ ব্যাধির কারণ হয়ে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। বায়ু দূষণের কারণে ক্যান্সার, ফুসফুসের রোগ, চোখের রোগ, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসনালীর রোগ, মাথা ব্যথা, টাইফয়েড, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হাইপারটেনশন, হাঁপানি, পেটের অসুখসহ অসংখ্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নাগরিকবৃন্দ।

নিম্ন বিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তরাই এসব রোগের শিকার হচ্ছে বেশি। কেননা তারা তুলনামূলক বেশি ঘোরাফেরা করে বাইরে। কাজ করতে হয় প্রয়োজনের তাগিদে। স্বাস্থ্য পরিচর্যার সুযোগ এদের খুব কম। থাকলেও বলা যেতে পারে অপর্যাপ্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ু দূষণের কারণে নাগরিকদের দৈহিক, মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ প্রচন্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

অন্যদিকে, শব্দদূষণের কারণে নাগরিক যন্ত্রণা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশের নামে শব্দ-দূষণের নামে যে অত্যাচার সহ্য করতে হয়, তা রীতিমত অসহনীয়। নানাবিধ দূষণের ফলে যেন জনগণের স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। দূষণের বিরুদ্ধে যত আইন আছে, তার প্রয়োগ থাকা চাই।

🪐বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে আপডেট খবর পেতে ভিজিট করুন- talashtv24🪐

Print Friendly, PDF & Email

About newsdesk

Check Also

চট্টগ্রামের বার আউলিয়ার সরদার হযরত শাহপীর আউলিয়া (রাহ.) এর ৭৪৮তম বার্ষিক ওরশ শরীফ সম্পন্ন

🕒 চট্টগ্রাম ☰ মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ✒️মো. জহিরুল ইসলাম সিকদার (লোহাগাড়া) : নিউজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *