২০/০৫/২০২৫ ইং
Home / সারাবাংলা / চট্রগ্রাম / ঝুম বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরী যেন কর্ণফুলী নদী!

ঝুম বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরী যেন কর্ণফুলী নদী!

ঝুম বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরী যেন কর্ণফুলী নদী!

প্রকাশিত: রোববার, ৬ই জুন ২০২১ ইংরেজি

মোঃ হাসান মিয়া (প্রতিনিধি):

শনিবার (৫ই জুন) রাত থেকে টানা বৃষ্টিপাতে রীতিমত পানিতে ভাসছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। তীব্র জলাবন্ধতায় আটকা পড়ে নরক যন্ত্রণায় ভুগছেন নগরীর লাখো মানুষ। চারদিকে থৈ থৈ পানিতে পুরো চট্টগাম শহরকেই মনে হচ্ছে কর্ণফুলী নদী। কাকভেজা হয়েই কর্মস্থলে যেতে হয়েছে চাকরিজীবীদের। জমে যাওয়া পানি মাড়িয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে গণপরিবহন।

রোববার (৬ই জুন) সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগামে ৭৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টি জানান দিয়েছে বর্ষা এসে গেছে একটু আগে ভাগেই। যদিও আষাঢ় মাস আসতে আরও সপ্তাহ খানেক বাকি। বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতার সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানি যোগ দেওয়ায় পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে বহুগুণ। কিছু গাড়ি চলাচল করেছে হেডলাইড জ্বালিয়ে। কিছু রিকশা কোমর পানিতে টেনে নিচ্ছেন চালকেরা। আর কিছু গাড়ি আটকে আছে পানিতে। এমন দুর্ভোগের পথ পাড়ি দিয়ে অফিসগামী কর্মজীবীদের পৌঁছতে হয়েছে অফিসে।

জুন মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বিস্তার লাভ করার অনুকূল পরিবেশ থাকতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮৯ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হিসেবে ধরা হয়েছে। এই মাসে বঙ্গোপসাগরে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ অথবা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এছাড়া উত্তর মধ্যাঞ্চলে (২-৩) দিন মাঝারি অথবা তীব্র বজ্রঝড় ও অন্যান্য জায়গায় (৩-৪) দিন হালকা অথবা মাঝারি বজ্রঝড় হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, বছর কয়েকক আগে অর্থাৎ বিগত ১৪২৫ বঙ্গাব্দের বৈশাখেই শ্রাবণ ধারায় আগাম বর্ষার এক ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। সেই বছর মধ্য বৈশাখ পর্যন্ত দেশে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, তা বিগত সাড়ে তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে এবার কালবৈশাখী মৌসুমে প্রত্যাশিত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়নি।

জুনের শেষ থেকে আগস্টের শেষ সপ্তাহ পর্যন্তই বর্ষা মৌসুম ধরা হয়। দেশের নদ-নদীর পানির ৯৩ শতাংশই আসে উজানের দেশ নেপাল, ভারত এবং কিছুটা ভুটান থেকে। ব্ৰহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা এবং মেঘনা অববাহিকায় বৃষ্টিপাতের ওপরই বাংলাদেশে বন্যা হবে কিনা তা অনেকটাই নির্ভর করে। উজানের পাশাপাশি দেশে অতিবৃষ্টি হলে জুনের শেষ দিকে ক্রমাগতভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। আর নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রাক মৌসুমি বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে তা থেমে থেমে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হবে।

এদিকে চাক্তাই খাল ও হিজড়া খাল পুরোপুরি পরিষ্কার না হওয়ায় বৃষ্টির পানি আশপাশের ঘর-বাড়িতে উঠে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ’র অধীনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান প্রকল্পের অধীনে নগরের বিভিন্ন খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, যা এখন জলাবদ্ধতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

Print Friendly, PDF & Email

About newsdesk

Check Also

চট্টগ্রামের বার আউলিয়ার সরদার হযরত শাহপীর আউলিয়া (রাহ.) এর ৭৪৮তম বার্ষিক ওরশ শরীফ সম্পন্ন

🕒 চট্টগ্রাম ☰ মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ✒️মো. জহিরুল ইসলাম সিকদার (লোহাগাড়া) : নিউজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *