ঢাকা | শনিবার, ২৭শে আগস্ট ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের। তবে আশার কথা হচ্ছে গত এক সপ্তাহ ধরে চালের বাজার উচ্চমূল্যেই স্থিতিশীল রয়েছে। নতুন করে কোনো চালের দাম বাড়েনি। বরং চিকন চালের দাম কেজিতে এক টাকা কমলেও মোটা চাল গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
আমদানির চালও বাজারে ঢুকতে শুরু করেছে। তবে ব্যবসায়ীরা ডলারের দাম বেশি ও সংকটের কারণে বড় চালানে চাল আমদানি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
শনিবার (২৭শে আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চাল পাইজাম ও হাস্কি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। মোটা চাল স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। গত সপ্তাহেও চিকন চাল ছাড়া অন্য সব চাল একই দামে বিক্রি হয়েছে।
পাইকারি বাজারে চিকন চাল প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৮০ টাকা, বাসমতি ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা। মোটা চাল প্রতি কেজি পাইজাম ৫০ থেকে ৫৩ টাকা, স্বর্ণা ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। মাঝারি মানের প্রতিকেজি আটাশ চাল ৫৩ থেকে ৫৬ টাকা। হাস্কি চাল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, হঠাৎ তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মনে আতঙ্ক কাজ করেছে। হঠাৎ করে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চালের সরবরাহ কমে গিয়েছিল। তখন মিল মালিকরা সুযোগ বুঝে চালের দাম বাড়িয়ে দেন। তবে এখন বাজারে চাহিদা কমে গেছে তাই চালের দামও স্থিতিশীল রয়েছে। মোটা চালের দাম আগের মতোই আছে। চিকন চাল বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমেছে মানভেদে। অন্যদিকে আমদানিকৃত চালও বাজারে আসতে শুরু করেছে। ডলারের দামও নিম্নমুখী। আমদানি পর্যায়ে আরও ১০ শতাংশ ভ্যাট কমানোর কথা চলছে। ফলে চাল আমদানি বেড়েছে। আশা করা যাচ্ছে, সামনে দাম আরও কমে আসবে।
বাবুবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন বলেন, জ্বালানি তেলের কারণে ট্রাকভাড়া বেড়েছে। আগে যেখানে কুষ্টিয়া থেকে ১৭ হাজার টাকায় বড় ট্রাক আসতো, সেটা এখন ২৫ হাজার লাগছে। একটি বড় ট্রাকে ২৫০ বস্তা চাল আসে। বাড়তি ভাড়ার কারণে প্রতি কেজি চালে প্রায় ৫০ পয়সার বেশি খরচ হচ্ছে। সে কারণে চালের দাম বেড়েছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি শুল্ক আরও কমানো হলে দাম আরও কমবে। এছাড়া আমদানি করা চাল দেশে ঢুকছে। আশা করছি খুব শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার বাজারে মোটা চালের (সিদ্ধ) পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ৪৪ থেকে ৫০ টাকা। আর খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ৪৮ থেকে ৫২ টাকা।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমদানি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। চাল আমদানির সুবিধাজনক পেমেন্টের জন্য যা যা করার দরকার, তা ক্লিয়ার আছে। আপনারা দেখতে থাকেন, গম আসতে থাকবে, চাল আসতে থাকবে। চালের দামও কমছে। গত সপ্তাহে যেটা বাড়িয়েছে, সেটা কমছে। এর মধ্যে ১ই সেপ্টেম্বর থেকে ওএমএস দেওয়ার পরে কমবে। আমরা আশা করছি, ওএমএস’র বিতরণের ঘোষণা দেওয়ার পরই চালের দাম আস্তে-আস্তে কমছে।
বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে দেশ-বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে ভিজিট করুন- talashtv24.com