১৮/১০/২০২৪ ইং
Home / তালাশটিভি২৪ / গরুর মাংসের উপকারিতা

গরুর মাংসের উপকারিতা

গরুর মাংসের উপকারিতা

প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩শে জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দ

নিউজ ডেস্ক, তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম

উচ্চমান সম্পন্ন প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের ভরপুর উৎস হলো গরুর মাংস। স্বাস্থ্যের প্রশ্নে একে প্রায়ই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলেও নানা সময়ে দেখা গেছে এর অপকারের চেয়ে উপকার বেশি। মাংসপেশী গঠনে প্রাণীজ আমিষ লাগবেই। কারণ এতে দরকারি সব অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে। এ কারণে গরুর মাংসকে বলা হয় ‘কমপ্লিট প্রোটিন’। আর পরিমিত মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ না করলে কিন্তু বয়সের সঙ্গে শরীরের পেশী ক্ষয় হতে থাকবে দ্রুত। যাকে বলে ‘স্যারকোপেনিয়া’। মাঝে মাঝে এই রোগটি কিন্তু মারাত্মক আকারে দেখা দিতে পারে।

যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন তাদের পেশীতে চাই বাড়তি শক্তির যোগান। আর পেশীতে এ শক্তির যোগান দেবে ‘কারনোসাইন’ নামের একটি উপাদান। যা তৈরি হয় ‘বেটা-অ্যালানাইন’ থেকে। গরুর মাংসে এই ‘বেটা-অ্যালানাইন’ আছে যথেষ্ট পরিমাণে। যারা গরুর মাংস একেবারেই খাচ্ছেন না তাদের পেশীতে ‘কারনোসাইন’র পরিমাণ দ্রুত কমতে থাকে। আবার এর পরিমাণটা ঠিকঠাক থাকলে অল্প পরিশ্রমেই প্রচণ্ড ক্লান্তি এসে ভর করবে না।

রক্তে লৌহকণিকা কমে গেলে দেখা দেয় রক্তশূন্যতা তথা অ্যানিমিয়া। এতে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায় এবং শরীরও অক্সিজেন পায় কম। এর বড় কারণ শরীরের আয়রনের ঘাটতি। প্রাণীজ আমিষের মধ্যে গরুর মাংসই আয়রনের বড় উৎস। সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে গরুর মাংসেই আছে হিম-আয়রন যা কিনা সবজিতে পাওয়া যায় না বললেই চলে। আর এ জাতীয় আয়রন শরীর শোষণও করতে পারে বেশি। তাই বলে অবশ্য বেশি বেশি খাওয়াটা ঠিক হবে না। এতে আয়রন-ওভারেলোড নামের সমস্যা দেখা দেবে শরীরে।

গরুর মাংসে একাধারে আছে ভিটামিন বি-১২, জিংক, সেলেনিয়াম, নায়াসিন, বি-৬, ফসফরাস। এর বাইরেও আরও কিছু ভিটামিন পাওয়া যাবে গরুর মাংসে। তবে এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বড় হওয়া গরুর তাজার মাংসের কথাই বলা হয়েছে। অপ্রাকৃতিক খাবার খেয়ে মোটাতাজা করা গরু কিংবা অতিরিক্ত লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা গরুর মাংসে কিন্তু এসব উপকারি খনিজ পাওয়া যাবে না।

গরুর মাংসে আরও কিছু উপকারী বায়ো-অ্যাকটিভ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া গেছে। পরিমিত মাত্রায় ও নিয়মানুযায়ী খেলে যেটার সুফল মিলবে। মজার বিষয় হলো ঘাষ খাওয়া গরুর মাংসে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও পাওয়া যায় প্রচুর। যা কিনা হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। এতে আবার ভিটামিন-এ ও ই-ও রয়েছে। তবে শস্যদানা (ভূষি, খৈল) খেয়ে অভ্যস্ত গরুর মাংসের এসব নাও মিলতে পারে।

এ ছাড়া গরুর মাংসে থাকা ক্রিয়েটাইন আপনার পেশীর শক্তি যোগাবে। নিয়মিত জিমে যাচ্ছেন যারা তাদের জন্য এটা খুবই দরকারি খনিজ। এনার্জি ড্রিংকে প্রক্রিয়াজাত করে মিশিয়ে দেওয়া হয় টরিন নামের একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অ্যামাইনো অ্যাসিড। গরুর মাংসে প্রাকৃতিকভাবেই থাকে ওটা। প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বড় হওয়া গরুর মাংসে থাকে ডায়েটারি কোলেস্টেরল। যা রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ায় না। শরীরে নতুন কোষ গঠনের অন্যতম উপাদান এটি।

স্বাস্থ্য নিয়ে গরুর মাংসকে কম দোষারোপ করা হয় না। এর কারণ হলো চর্বির প্রতি আমাদের অতিরিক্ত টান। উপকারটা পেতে হলে চর্বিটা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। আবার ঝোল করে রান্না করার চেয়ে স্বাস্থ্যবিদরা বলেন, গরুর মাংস গ্রিল বা রোস্ট করে খাওয়াই উত্তম। এক্ষেত্রে তেল হিসেবে সূর্যমুখি কিংবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। গ্রিল করার সময় আবার সরাসরি আগুন লাগানো যাবে না। মাংস যদি পুড়েই যায়, তবে পোড়া অংশ ফেলে দিয়ে খেতে হবে। অতিরিক্ত রান্না করা মাংস খাওয়াও ক্ষতির কারণ হতে পারে।

একগাদা মাংস একসঙ্গে খাওয়া যাবে না। মাংসের সমপরিমাণ ফাইবার সমৃদ্ধ সবজিও খাওয়ার চর্চা করুন। এতে হজমের সঙ্গে সম্পর্কিত অঙ্গগুলো সুস্থ থাকবে। মাংস খেয়ে শুয়ে বসে কাটালে হবে না। পরিমিত মাত্রায় খাওয়ার পর ব্যায়ামটাও চালিয়ে যান সমানতালে। তখন আর রক্তের কোলেস্টেরল নিয়েও চিন্তা করতে হবে না। নির্দিষ্ট বিরতিতে রক্তের ভালো-খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারিড মাপুন। অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Print Friendly, PDF & Email

About newsdesk

Check Also

সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র ওরশ শরীফ কাল

🕒 চট্টগ্রাম ☰ বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ✒️নিজস্ব প্রতিবেদক | নিউজ ডেস্ক- তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *