নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোপ মাঠের ৬ বিশাল এলাকা জুড়ে নানা আল্পনায় সারি সারি মোমবাতি সাজানো। কোথাও শহীদ মিনার, কোথাও জাতীয় স্মৃতিসৌধ আবার কোথাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত নানা অবকাঠামোর আদলে তৈরি। ২১শে ফেব্রুয়ারি রবিবার সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে ওঠে এক লাখ মোমবাতি। মোমের আলোয় লাখো মানুষ স্মরণ করে ভাষা শহীদদের।
জেলা একুশ উদযাপন পর্ষদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এ মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সন্ধ্যা ঠিক সাড়ে ছয়টায় কলেজ মাঠে মোমবাতি জ্বালানো কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একুশ উদযাপন পর্ষদের সভাপতি ও সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মুন্সি হাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ রবিউল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেন বিশ্বাস,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন পিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস ঘোস, পৌর মেয়র আনজুমান আরা, একুশ উদযাপন পর্ষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট নাট্যকার কচি খন্দকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, একুশের আলোয় দূর হোক সাম্প্রদায়িক শক্তি। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জেগে উঠুক এ প্রজন্ম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ আর জয় বাংলার শ্লোগানকে নিজের বুকে ধারণ করুক। চেতনাকে শানিত করুক দেশ গড়ার কাজে।
মোমবাতি প্রজ্জলনের সঙ্গে সঙ্গে মাঠের এক কোণায় স্থাপিত মঞ্চে অমর একুশের গান দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান চলে মোমবাতি জ্বলার সময়কাল পর্যন্ত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল পৌর কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটু।
মুজিব বর্ষে এবারের অনুষ্ঠান উৎসর্গ করা হয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ভাষা শহীদদের নামে। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। ১০০ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তাসহ অনুষ্ঠান পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করেন।
একুশ উদযাপন পর্ষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার বলেন, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের বিশাল মাঠে ১৯৯৮ সালের এই দিন থেকে শুরু হয় মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত অসাম্প্রদায়িক মোর্চা গঠনই ছিল আমাদের মুল লক্ষ্য। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ ২৮ বছর বয়স হতে চলেছে আমাদের এই কার্যক্রমের। তিনি এই কর্মসূচিকে সরকারি স্বীকৃতির পাশাপাশি গ্রিনিজ বুকে এবং প্রতিটি স্কুল-মাদরাসায় শহীদ মিনার গড়ে তোলার দাবি জানান।