🕒 জাতীয় ☰ মঙ্গলবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
✒️বগুড়া প্রতিনিধি: নিউজ ডেস্ক- তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর|গত বছর মাফিউল শহীদ সোহরাওয়ার্দীতে এবং এবার সাফিউল দিনাজপুর ও রাফিউল নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় জমজ তিন ভাই মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এদের মধ্যে এক ভাই গত বছর, অপর দুই ভাই এবার চান্স পান। তারা তিনজনই ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও পরে বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।
তিন জমজ ভাইয়ের মধ্যে মো: মাফিউল হাসান গত বছর ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে এবং এবার মো: সাফিউল হাসান দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে এবং মো: রাফিউল হাসান নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন।
ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “সোমবার তিন ভাই একই সঙ্গে স্কুলে আসে। শিক্ষকদের কাছ থেকে দো’য়া চায়। বিনয়ী, ভদ্র তিন ভাইকে দো’য়া করি। তারা মিষ্টি নিয়ে এসেছিল। ওদের মেডিকেলে চান্স পাওয়া আমাদের স্কুলের গৌরব।”
সরকারি শাহ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম বলেন, “শুনেছি জমজ তিন ভাইয়ের মধ্যে গতবার একজন এবং এবার দু’জন মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। ওদের জন্য দো’য়া থাকল।”
তাদের মা আর্জিনা বেগম বলেন, “২০০৯ সালে ওদের বাবা গোলাম মোস্তফা হৃদরোগে মারা যায়। তখন ওদের বয়স পাঁচ মাস। বাবার স্নেহ-মমতা পায়নি ওরা। বাবা মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানকে পড়া-লেখা করানো নিয়ে বিপাকে পড়ি। নিজে কষ্ট করে এবং জমি বিক্রি করে ওদের পড়া-লেখা করিয়েছি। প্রায় পাঁচ বিঘা জমি ছিল। বাবার বাড়ির জমিও বিক্রি করে ওদের পিছে লাগিয়েছি। বাকি যা আছে তাও প্রয়োজনে বিক্রি করব। তবুও ওদের চিকিৎসক বানাব; যাতে আমাদের মত গরিব মানুষদের সেবা করতে পারে। কত খুশি হয়েছি প্রকাশ করতে পারব না। গ্রামের লোকজন ওদের যখন দেখতে আসে আমার তখন বুকটা ভরে যায়।”
গতবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ভর্তি হওয়া মাফিউল হাসান বলেন, “তিন ভাই বগুড়ায় একটি মেসে থেকে একই সঙ্গে শাহ সুলতান কলেজে পড়েছি। মা কষ্ট করে এবং জমি বিক্রি করে পড়ালেখা করিয়েছে। কখনোই আমাদের কষ্ট করতে দেননি। বথুয়াবাড়ী গ্রামে আমরাই প্রথম মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। এর আগে আর কেউ চান্স পায়নি। খুবই ভালো লাগছে।”
এবার দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া সাফিউল হাসান বলেন, “বাবা থাকলে কত খুশি হতেন। বাবাকে হারিয়েছি শিশুকালে। এখন মা আমাদের বাবার অভাব পূরণ করছে। মানুষের সেবা করার জন্য চিকিৎসক হতে পারি এই দো’য়া চাই সবার কাছে।”
নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া রাফিউল হাসান বলেন, “অসুস্থ অবস্থায় বাবা মারা যান। যখন বিষয়টি জানতে পারলাম তখন থেকেই তিন ভাই প্রতিজ্ঞা করি ডাক্তারি পড়ব এবং গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা করব। বাবার মত যেন কাউকে অকালে ঝরে পড়তে না হয়।”
🪐বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে সবার আগে আপডেট খবর পেতে ভিজিট করুন- talashtv24🪐