জাতীয় ☰ সোমবার ০৪ জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
নিউজ ডেস্ক তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর | দেশে আবহাওয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এলাকাভেদে দিনে ১০ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা। গরমের মধ্যে দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না পেয়ে বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। সাধারণ দৈনন্দিন কাজ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন জনসাধারণ। গরমজনিত অসুস্থতাও বাড়ছে।
দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশের (পিজিসিবি) দৈনিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ১৪ হাজার ৯৫০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১৩ হাজার ৬৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। লোডশেডিং হয়েছে ১ হাজার ৩০৫ মেগাওয়াট। দেশে বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ সিস্টেম লস প্রায় ১০ শতাংশ। অর্থাৎ উৎপাদিত প্রতি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রায় ১০ শতাংশ গ্রাহক পায় না।
পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, সাবস্টেশন পর্যায়ের লোডশেডিং পিডিবি ও পিজিসিবির রিপোর্টে দেখানো হয়। প্রকৃতপক্ষে এখন দৈনিক চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর তাপমাত্রা আরো বেড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে লোডশেডিংয়ের পরিমাণও বেড়েছে।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং গণমাধ্যমকে দেওয়া তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শহর এলাকায় দৈনিক আট থেকে দশ বার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে। প্রতিবার গড়ে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়া এবং লোডশেডিংয়ের পরিমাণ শহরের চেয়ে দ্বিগুণ বা তারও বেশি। গত এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং বেড়েছে।
| বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে আপডেট খবর পেতে ভিজিট করুন- talashtv24
চলমান ডলার ও জ্বালানি সংকট শিগিগরই কাটছে না। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতিও শিগিগরই পুরোপুরি ঠিক হবেনা, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় লোডশেডিং আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ মাসের শেষ দিকে বা আগামী মাসের শুরুর দিকে জ্বালানি সরবরাহ বাড়বে। তাতে পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হবে।
এদিকে গতকাল শনিবার সাভারে এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি সংকটের কারণে চলমান লোডশেডিং আরো কিছু দিন থাকবে। জ্বালানি সংকটের কারণে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি অংশ বন্ধ আছে। আগামী ৫ জুনের পর আরেকটি অংশও জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে।
আমদানির জন্য এলসি খুলতে দেরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কয়লা আমদানি করতে আরো অন্তত ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবে। কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে লোডশেডিং বেড়েছে। প্রায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে। তেলের ব্যাপারেও আমরা হিমশিম খাচ্ছি। এখন শিল্পে বেশির ভাগ গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। আর গরম বেড়ে ৩৮ ডিগ্রির ওপরে চলে গেছে। কোনো কোনো জায়গায় ৪০-৪১ ডিগ্রি। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে লোডশেডিং বেড়েছে।
গ্রাহকরা বলছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে গরমের ভোগান্তি অনেকটা কম হতো। দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পেয়ে অনেক শিল্প উৎপাদন বন্ধ করেছে কিংবা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে অনেককে। হাসপাতালেও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল-কলেজের মাঠে পিটি, প্যারেড ও খেলাধুলা স্থগিত বা অনুৎসাহিত করা হচ্ছে।