ঢাকা | রবিবার, ২৮শে আগস্ট ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
আইজিপি বেনজীর আহমেদকে জাতিসংঘ পুলিশ প্রধান সম্মেলনে পাঠানোকে সরকারের ‘অপরিণামদর্শী’ সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধরনের দায়-দায়িত্বহীন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। গতকাল দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার লক্ষ্যে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদেরকে বৈধতা প্রদানের চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দল সরকারের হিংস্র আচরণ নিয়ে বলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে সরকার গুম করেছে, ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে, বিনা বিচারে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করেছে। দেশে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, মিটিং-মিছিল করার কোনো অধিকার নেই, বিনা অনুমতিতে এমনকি কোনো সমাবেশ পর্যন্ত করতে দেয় না ও গণমাধ্যমগুলোর ওপর একটা সেলফ সেন্সারশিপে বাধ্য করা হয়েছে। এসব অভিযোগে সরকার কর্ণপাত করছে না দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমনকি জাতিসংঘের মতো বিশ্বের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য শক্তিশালী সংস্থার পক্ষ থেকেও বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও তারা তোয়াক্কা করছে না।
সংবাদ সম্মেলনে ভোলায় গুলি করে দু’জনকে হত্যা এবং ঢাকা ও কুমিল্লায় পুলিশের হেফাজতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির আন্দোলনে পুলিশ ও সরকারি দলের হামলা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এই অপরিনামদর্শী ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্তের দায় কেবল সরকারকেই নিতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০টির অধিক স্থানে হামলা হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক ও গ্রেপ্তার হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে প্রায় ২০টার মতো জায়গায়। আসামি করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার মানুষকে এবং মামলা করা হয়েছে ১৫টার ওপরে।
এসব হামলার কারণে বিএনপি কী আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। বিএনপি তো আন্দোলন শুরুই করেছে। আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে আবার একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে পেতে চাই।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, উনি যে প্রেস কনফারেন্স করেছেন সেখানে পরিষ্কারভাবে বলে গেছেন বাংলাদেশে কোথায় অবস্থান করছে। উনি লাস্টে যেটা বলেছেন, এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে গেলে একটা স্বচ্ছ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার প্রয়োজনীয়তা আছে। উনি তদন্তের প্রস্তাব দিয়ে গেছেন এবং প্রয়োজনে জাতিসংঘের ওয়ার্কি গ্রুপ এই তদন্তে সহায়তা করবে, এটাও বলে গেছেন। তারপরেও যদি এদের (সরকার) মাথায় এই বিষয়টা না ঢুকে তাহলে তাদের মাথা ড্রিল করার ছাড়া উপায় নাই। ড্রিল করে ঢুকাতে হবে, তা না হলে এটা ঢুকবে না, আমি বলছি। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে দেশ-বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে ভিজিট করুন- talashtv24.com