রাজশাহী | সোমবার, ১৫ই আগস্ট ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধু ততদিন থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফর উল্লাহ। ‘তোমরা জানো না আমার মরণ নাই, এই বাংলায় প্রতিটি দিবসে আমি বারবার জন্মাই’। এ চরণটুকু আবৃত্তি করে জাফর উল্লাহ বলেন, প্রতিটি দিবসে, প্রতিটি মিছিলে, আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর নাম আসে। অথচ ঘাতকরা মনে করেছিল বঙ্গবন্ধুকে মারলে তার নাম এ দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, ওরা ভুল ভেবেছিল। তারা জানতো না বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ।
সোমবার (১৫ই আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার এসব কথা বলেন। রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সভায় বিভাগীয় কমিশনার জাফর উল্লাহ এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জাতির পিতাকে নিয়ে কথা বলতে গেলে নিজেকে অনেক ক্ষুদ্র মনে হয়। তাকে নিয়ে কথা বলা কী আমাকে মানায়? বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু বলা তাকেই মানায় যে বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছে। এই মহামানবের ৫৫ বছরের জীবনকে যদি তিন ভাগে ভাগ করি তাহলে শৈশব, কিশোর, তারণ্য ও যৌবন। প্রত্যেক ক্ষেত্রে তার নেতৃত্ব নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বলা যায়।
৭ই মার্চের ভাষণের কথা উল্লেখ করে জাফর উল্লাহ বলেন, প্রত্যেকটি শব্দ চয়নে এত ডিপ্লোম্যাটিক ছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা মাত্র নয় মাসে স্বাধীন হয়েছি- এই স্বাধীনতার পেছনে ছিল তার সেই জাদুকরি ভাষণ। তার বক্তব্য অনুকরণ করার অনেকবার চেষ্টা করেছি। আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের পক্ষে তা কী সম্ভব? শুধু লজ্জা পাই, আমরাই বিশ্বাস ঘাতক, ক্ষমতার লোভে তাকে হত্যা করেছি। কতটা সাহস থাকলে একজন মানুষ মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পা তুলে বসে থাকতে পারে, তা বঙ্গবন্ধুকে দেখে শেখা যায়। তৎকালীন সাত কোটি বাঙালির সাহস যুক্ত করলে তার সাহসের সমান হতে পারত। তিনি যত নরম ছিলেন, ছিলেন ততই শক্ত।
বঙ্গবন্ধুর শাসন দক্ষতার কথা তুলে ধরে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ৫৫ বছরের জীবনে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনা করতে পেরেছিলেন। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ১২১টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেন। বাংলাদেশ ৩৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে দিয়েছেন। এখন আমাদের কর্তব্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টার্গেট পূরণ করা। এ লক্ষ্যে আমাদের যার যার অবস্থান থেকে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করা উচিত। তা হলে জাতির পিতার স্বপ্নের সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারব। আর এভাবেই আমরা বঙ্গবন্ধুকে যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারব।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, আরএমপির কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুল হাদী আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। সভা শেষে বিভাগীয় কমিশনার বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এর আগে মহানগরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত শোক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে দেশ-বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে ভিজিট করুন- talashtv24.com