ঢাকা | বুধবার, ১১ই মে ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
নিউজ ডেস্ক: খেলাধুলা-শরীর চর্চা বিমুখ হয়ে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপে আসক্ত শিশুদের নিয়ে নিজের দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটা আসলে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থতার লক্ষণ না। বুধবার (১১ই মে) সকালে ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ২০১৩-২০২১’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে (ভার্চ্যুয়াল) প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুরা, এখন তো সব ফ্ল্যাটে বাস করে, ফ্ল্যাটে বাস করে করে তারা ফার্মের মুরগির মতোই হয়ে যাচ্ছে। হাঁটা-চলা আর এখনতো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ আর আইপ্যাড এগুলো ব্যবহার করে সারাক্ষণ ওগুলোর মধ্যে পড়ে থাকে। এটা আসলে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থতার লক্ষণ না।
বাবা-মা ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অন্তত বাবা-মা ও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ; কিছু সময়ের জন্য হলেও সন্তানরা যাতে হাত-পা ছুঁড়ে খেলতে পারে সে বিষয়ে আপনাদের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আর প্রত্যেকটা এলাকায় খেলার মাঠ থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন।
খেলাধুলা-দৌড় ঝাঁপের মধ্যে দিয়ে শারিরীক ও মানসিক বিকাশ হওয়ার সুযোগ পায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা বা স্পোর্টস এটা একটা জাতি গঠনে বিশেষ অবদান রাখে বলে আমি বিশ্বাস করি। খেলাধুলা এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিকভাবেও আমাদের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট উন্নত হবে।
প্রতিটি এলাকাতে খেলার মাঠ রাখার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলার বিষয়ে আমাদের আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। সবচেয়ে দুর্ভাগ্য হলো ঢাকা শহরেই খেলাধুলার জায়গা কম। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি- প্রতিটি এলাকায়ই যেন খেলার মাঠ থাকে। আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি, যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছি আমরা খেলার মাঠ করে দিচ্ছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রিয় খেলা ছিল ফুটবল। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, ‘আব্বার টিম ও আমার টিমে যখন খেলা হতো তখন জনসাধারণ খুব উপভোগ করত। আমাদের স্কুল টিম খুব ভালো ছিল। মহকুমায় যারা ভালো খেলোয়াড় ছিল, তাদের এনে ভর্তি করতাম এবং বেতন ফ্রি করে দিতাম।’
দেশীয় খেলাগুলো আবারও ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের অভ্যন্তরে ও আমাদের গ্রামে অনেকগুলো খেলা রয়েছে। এসব গ্রামীণ খেলাগুলো কিছু চালু করা হয়েছে। এগুলো সচল করতে হবে। যেগুলোতে খুব বেশি খরচও লাগে না। নিজেরা খেলবে, আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা, আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা, এই প্রতিযোগিতা যাতে ব্যাপকভাবে চলে সেই ব্যবস্থাটাও নিতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন সেটাও আমরা করে দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে ৮৫ জন গুণী খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠককে ২০১৩ হতে ২০২০ সালের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল ৭৭ জন ক্রীড়াবিদের হাতে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে (ভার্চ্যুয়ালি) আরও ৮জন বিজয়ীকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে দেশ-বিদেশের সব তাজা খবর জানতে ভিজিট করুন- talashtv24.com