চট্টগ্রাম | শুক্রবার, ৬ই মে ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ব্যতিক্রমি ‘চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই উৎসব চট্টগ্রামের সাংসদ, মেয়র, রাজনীতিক, সংস্কৃতিজনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। উৎসবে উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র কোতোয়ালি আসনের সাংসদ ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিগগিরই লালদিঘীর মাঠ উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও নগর আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক জহুর লাল হাজারীর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৫ই মে) বিকেলে নগরীর লালদিঘীর পাড় গোল চত্বরে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেখানে স্থাপিত মঞ্চে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান-নাচ পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
উৎসবে কথা-মালায় অংশ নিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সবাইকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘কোভিড মহামারির কঠিন সময়ে চারটি ঈদ উৎসব অনেক কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের ঈদ পালন করতে হয়েছে। দীর্ঘদিন পর প্রায় কোভিডমুক্ত উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা ঈদ করছি। মানুষ আবার জেগে উঠেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবীত হয়ে আমরা লালদিঘী চত্বরে সমবেত হয়েছি। ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সমবেত হয়েছি। এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন।’
লালদিঘীর মাঠ দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে আশ্বস্ত করছি, সংস্কার কাজ শেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা নিয়ে শিগগিরই লালদিঘীর মাঠ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এখানে আবার রাজনৈতিক কার্যক্রম হবে, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হবে, খেলাধুলা হবে। দৃষ্টিনন্দনভাবে মাঠের উন্নয়ন হয়েছে। মাঠে হাঁটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে একটি স্থায়ী মঞ্চও করে দেওয়া হয়েছে। এই মঞ্চে আমরা সবধরনের অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ করতে পারব।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অনেক ইতিহাসের জন্মদাতা এই লালদিঘী। এই লালদিঘী মাঠ থেকে প্রথম আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। এই চট্টগ্রামে অনেক বীরের জন্ম হয়েছে। ঝড়-তুফান এলে আমরা শিনা দিয়ে ঠেকাই, আমরা চাটগাঁইয়া।’
সামনের বছর থেকে আরও বড় আকারে ‘চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব’ করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সবকিছু সবার আগে শুরু করে। এই আনন্দমেলার শুরু হয়েছে, এটা বন্ধ হবে না। এই আনন্দমেলা চলবে। লালদিঘীর মাঠ বন্ধ, সেজন্য বলিখেলা হবে না বলা হয়েছিল। সাংবাদিকরা বলল- আমাদের ঐতিহ্য তো নষ্ট হয়ে যাবে। আমি বললাম, বলিখেলা হবে, ঐতিহ্য নষ্ট হবে না। মাঠের বাইরে মঞ্চ করে বলিখেলা হয়েছে। আমি এই শহরের ছেলে, এই শহরের মেয়র। আমি ঘোষণা দিচ্ছি, এই আনন্দ উৎসবও চলতে থাকবে। আগামী বছর আরও বড় করে আনন্দ উৎসব করব, র্যালিও করব। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।’
কাউন্সিলর জহরলাল হাজারীর সভাপতিত্বে উৎসব মঞ্চে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন- একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম.এ. মালেক, সাংসদ এম.এ. লতিফ, চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম দোকান মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, ঐতিহাসিক আব্দুল জব্বারের বলিখেলার উদ্যোক্তা প্রয়াত আব্দুল জব্বারের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল।
কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী জানিয়েছেন, বেলুন উড়িনোর মাধ্যমে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী র্যালির উদ্বোধন করেন। ঘোড়ার গাড়ি, ব্যান্ডদল সহকারে র্যালি লালদিঘীর পাড় থেকে আন্দরকিল্লা হয়ে জামালখান পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে।
বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে দেশ-বিদেশের সব তাজা খবর জানতে ভিজিট করুন- talashtv24.com