প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
নিউজ ডেস্ক | চট্টগ্রাম | তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম
মোঃ হাসান মিয়া (চট্টগ্রাম):
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাস্থ রসুলবাগ আবাসিক এলাকায় সুজন দেবনাথ জয়ের বাসায় প্রতারক ইছামনির অবস্থান নেওয়ায় ভূক্তভোগী পরিবারের নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোছাম্মৎ কলি (ইছামনি) আনোয়ারা থানার সত্তার হাটস্থ কামাল সওদাগর বাড়ির মৃত মোঃ শফিকের মেয়ে। বিগত ০৭/০৯/২০১৫ ইংরেজি তারিখ ফটিকছড়ি থানা নিবাসী মোঃ আলমের ছেলে মোঃ জাফরের সাথে ইছামনির বিবাহ হয় এবং ২৫/১১/২০১৯ ইংরেজি সালে পূর্বের বিবাহের বিষয় গোপন রেখে হাটহাজারী থানা নিবাসী আনোয়ার মিয়ার ছেলের সাথে মোঃ জাহেদের সাথে ইছামনির বিবাহ হয়। পরে ইছামনি তার স্বামী মোঃ জাহেদ গং এর বিরুদ্ধে মিথ্যা সি.আর.মামলা-১২৪/২০ (হাটহাজারী) দায়ের করে। যার কোনো সত্যতা পাওয়া না যাওয়ায় তার স্বামী মোঃ জাহেদ গং কে আদালত বেকসুর খালাস দেয়। অপরদিকে সুজন দেবনাথ জয় (২৬) হাটহাজারী থানার মির্জাপুরস্থ মিলন দেবনাথের ছেলে এবং মুরাদপুরস্থ জিএম আইটি ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ২৬/১১/২০২১ ইংরেজি তারিখে ইছামনি তার প্রতারক চক্র নিয়ে কূ-উদ্দেশ্যে মিথ্যাভাবে ফাঁসানোর জন্য সুজনের বাসায় গিয়ে ৩/৪ দিন অবস্থান নিয়ে সুজন ও তার পরিবারের সদস্যের উপর অমানবিক নির্যাতন, মূল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর এবং নগদ টাকা লুঠ করে। তখন সুজন জরুরী সেবা '৯৯৯' এ অভিযোগ করাতে বাসায় পুলিশ আসলে পুলিশের সহায়তায় ইছামনিকে সুজনের বাসা থেকে বের করে এনে ৫ম বারের মতো সাবধান করে তাড়িয়ে দেয়া হয় পুলিশ। প্রতারক ইছামনির বিরুদ্ধে সুজন বিগত ০৪/০৩/২০২১ ইংরেজি তারিখে চট্টগ্রাম আদালতে একটি জিডি করে। যার নং- ৮৬/২০২১ (পাঁচলাইশ)। এবং বিগত ২১/০৪/২০২১ ইংরেজি তারিখে উপ-পুলিশ কমিশনারের কাছে ইছামনির বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে অভিযোগ প্রদান করে। সর্বশেষ বিগত ২৪/০৮/২০২১ ইংরেজি তারিখ উপ-পুলিশ কমিশনারের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সুজন প্রতারক ইছামনি ও তার বোন নার্গিস আকতারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর মামলা-৪৮৪/২১ (পাঁচলাইশ) দায়ের করে। যার তদন্তভার চট্টগ্রাম সি.আই.ডি জোনকে দেয়া হলে সি.আই.ডি এ বিষয়ে তদন্ত করে ইছামনির বিরুদ্ধে কোর্টে প্রতিবেদন প্রদান করে।
এই বিষয়ে ইছামনি থেকে জানতে চাইলে ইছামনি বলে, সুজন আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, সে আমাকে সারাজীবন দেখা-শোনা করবে ও খরচাদি দিবে। কিন্তু সে আমাকে খরচ দিচ্ছে না ও যোগাযোগও রাখছে না। আমাকে (ইসামনি) প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দিলে আমি সুজনকে কোনো সমস্যা করবো না এবং তার প্রতি আমার কোনো অভিযোগও থাকবে না। অন্যথা সুজনের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা করে তার জীবন নষ্ট করে দিবো। এবং তার শাস্তি নিশ্চিত করে প্রয়োজনে নিজেও আত্মহত্যা করবো।
অপরদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন বলে, ইছামনির কারণে আমার জীবনটা বিষন্ন হয়ে গেছে। এই প্রতারক ইছামনির মিথ্যাচারের কারণে আমাকে আমার পরিবার, সমাজ এবং সহকর্মীদের নিকট সবসময় মাথানিচু করে থাকতে হয়। প্রতারক ইছামনির নির্যাতন ও হুমকি সহ্য করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে আমি চট্টগ্রাম আদালতে সাধারণ ডায়েরী করি। পরবর্তীতে আমি ইছামনির নির্যাতন ও হুমকি দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় পাঁচলাইশ, চকবাজার, বায়েজিদ ও বাকলিয়া থানায় অভিযোগ করি। কিন্তু এতে করে প্রশাসন স্থায়ীভাবে কোনো সমাধান না দেয়ায় চট্টগ্রাম (সিএমপি) পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করি। কমিশনার মহোদয় অভিযোগটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অফিসার ইনচার্জ বাকলিয়া থানায় প্রেরণ করলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন প্রদান করেন পুলিশ। কিন্তু প্রশাসন এ পর্যন্ত প্রতারক ইছামনির বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমি চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত উক্ত মামলার তদন্তভার সি.আই.ডি কে প্রদান করেন। তৎপর সি.আই.ডি মামলাটি তদন্তপূর্বক ইসামনির বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। আমি আশা করি, আদালত এই প্রতারক মহিলাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিবে।
উল্লেখ্য যে, মোছাম্মৎ কলি (ইছামনি) বিভিন্ন কৌশলে বিবাহিত-অবিবাহিত সহজ-সরল মানুষকে কু-ফাঁদে ফেলে বিবাহ করে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়া তার নেশা ও পেশা। তেমনিভাবে প্রতারক ইছামনি বিবাহের কথা গোপন করে তার স্বামীদের সাথেও প্রতারণা করেছে। প্রতারক ইছামনির বিরুদ্ধে তার কূ-কর্মের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে 'দৈনিক পূর্বপ্রান্ত', 'তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর' ও 'বাংলাটুডে' পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন
স্বত্ব © ২০২৪ তালাশটিভি২৪ www.talashtv24.com