খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠালে পরিণতি শুভ হবে না : মির্জা ফখরুল
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬শে নভেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
নিউজ ডেস্ক | চট্টগ্রাম | তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম
গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে চলমান আন্দোলনে সবাইকে ঘর থেকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবন নিয়ে লড়াই করছেন। আমরা কি ঘরে বসে থাকব? আমরা ঘরে বসে থাকব না। আমরা সব শক্তি দিয়ে তার জীবন রক্ষার জন্য অবশ্যই প্রাণপণে কাজ করব। খালেদা জিয়াকে সু-চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
যুবদলকে কর্মসূচির জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সামনের দিনগুলোতে আরো শক্তি নিয়ে সবাইকে নেমে আসতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠালে পরিণতি শুভ হবে না উল্লেখ করে সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্যথায় এই জনগণ আপনাদের বিচার করবে, তাদের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তখন আর কাউকে খুঁজে পাবেন না। পেছনের দরজাটাও আপনারা খুঁজে পাবেন না। সবাইকে বলব, আসুন আমরা সবাই আরো ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করে সরকারকে বাধ্য করি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে এবং তাকে মুক্ত করতে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সমাবেশ হয়। গত বুধবার বিএনপি আট দিনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এটি তার প্রথম। যুবদলের নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে ফুটপাথে বসে খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে এই সমাবেশে অংশ নেন। যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসানের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপি মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের মোরতাজুল করীম বাদরু, আলী আকবর চুন্নু, মোনায়েম মুন্না, গোলাম রাব্বানী, তরিকুল ইসলাম বনি, এসএম. জাহাঙ্গীর, জাকির হোসেন সিদ্দিকী, কামাল আনোয়ার আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা শুনেছেন, পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এত অসুস্থ যে ডাক্তাররা বলেছেন, আমাদের সব বিদ্যা, আমাদের জ্ঞান প্রায় শেষ। আমরা এখানে আর বেশি কিছু করতে পারব না। পরিষ্কার করে তারা বলেছেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো দরকার চিকিৎসার জন্য। কিন্তু শেখ হাসিনা শুনতে চান না। তার মন্ত্রীরাও বলেন হ্যাঁ উচিত, আওয়ামী লীগের এমপিরাও বলেন, এটা মানবিক কারণে দেয়া উচিত। সারা দেশের মানুষ তো বলছেই, ডাক্তাররা বলছেন, উকিলরা বলছেন, বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, অধ্যাপকরা বলছেন কিন্তু তিনি এটা শুনতে চান না। আমরা জানি, আন্তর্জাতিকভাবেও তার ওপরে চাপ আসছে চিকিৎসার জন্য দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠানোর-কোনোটাই তিনি শুনছেন না।
কারাগারে স্লো পয়জনিং করা হয়েছিল : মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দেশনেত্রীকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল। আপনারা জানেন, পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত ভবনে যেখানে ইঁদুর, বিড়াল ঘুরে বেড়াত। চিকা ঘোরাঘুরি করত, স্যাঁতস্যাঁতে একটা ঘরের মধ্যে তাকে প্রায় দুই বছর আটক করে রাখা হয়েছিল। পরে তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল সেখানে তাকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয়নি। ফলে তার ভেতরে রোগের সূত্রপাত হয়। আজকে অনেকের মধ্যে এই প্রশ্ন উঠেছে, সেদিন কি বেগম খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিংয়ের কোনো ব্যবস্থা করা হয়েছিল? আমরা এটা জানতে চাই। এদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। যারা জোর করে আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে থাকতে পারে এবং যারা অবলীলায় ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে পারে, যারা অবলীলায় গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করতে পারে এবং তাদেরকে পঙ্গু করতে পারে, যারা অবলীলায় আমাদের নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ পাঁচ’শ নেতাকর্মীকে গুম করে দিতে পারে, তাদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।