
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুতে বায়তুশ শরফের রাহবার আল্লামা আবদুল হাই নদভীর গভীর শোক প্রকাশ
প্রকাশিত: রবিবার, ২২শে আগস্ট ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক, তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, দেশের নেতৃস্থানীয় বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সর্বোপরি আল জামেয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষাসচিব ও শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বায়তুশ শরফের সম্মানিত রাহবার আল্লামা শায়খ আবদুল হাই নদভী-হাফিযাহুল্লাহ।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, আমি হযরতের মৃত্যুর সংবাদ শ্রবণে অত্যন্ত ব্যথিত ও মর্মাহত হয়েছি। করোনার এই সংকটময় মুহুর্তে আমরা হারাচ্ছি একের পর এক মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যাঁরা ছিলেন সত্যিকার অর্থেই উলামায়ে রব্বানী। গত বছর থেকে হক্কানী আলেমদের মৃত্যুর যে মিছিল শুরু হয়েছে তা যেন থামছেই না। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি
বাহরুল উলুম আল্লামা শাহ্ মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী, আল্লামা শায়খ নূর হুসাইন কাসেমী, সাবেক মন্ত্রী আল্লামা মুফতি ওয়াক্কাস-রহি’মাহুমুল্লাহসহ অসংখ্য মুসলিম উম্মাহ্ দরদী নেতৃস্থানীয় উলামাদের। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁদের সবাইকে মাগফিরাত দান করুন-আমিন।
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর অথবা খবরের পিছনের খবর সরাসরি ‘তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম’ কে জানাতে ই-মেইল করুন-
talashtv247@gmail.com এই ঠিকানায়। আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করা হবে।
রাহবারে বায়তুশ শরফ, আল্লামা বাবুনগরী -রহি’মাহুল্লাহ’র বারাকাহ্পূর্ণ বর্ণিল কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, শায়খ বাবুনগরী রহি’মাহুল্লাহ ইলমুল হাদীসের সেবায় বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বে বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি হাদীসের শিক্ষা সরাসরি অর্জন করেছেন জগদ্বিখ্যাত মুহাদ্দিস শায়খুল হাদীস আল্লামা ইউসুফ বিন্নুরী-রহি’মাহুল্লাহ থেকে।
আল্লামা বাবুনগরী মহান আল্লাহর সাহায্যে নিজের অসাধারণ প্রচেষ্টায় আল্লামা বিন্নুরী-রহি’মাহুল্লাহ’র শ্রেষ্ঠ ছাত্রদের অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হন। আমি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, তিনি হাটহাজারী মাদরাসাতেই সুদীর্ঘ ৪০ বৎসর ইলমুল হাদীসের দরস দিয়ে আসছিলেন। এছাড়াও তাঁর আরেকটি অনন্য কীর্তি হলো হাটহাজারী মাদরাসাতে উসুলুল হাদীসের স্বতন্ত্র বিভাগ খোলা। এই অসামান্য উদ্যোগটিই যথেষ্ট তাঁর নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার জন্য।
আমি তাঁকে যতটুকু দেখেছি এবং জেনেছি তাতে বুঝতে পেরেছি তিনি ছিলেন বিনয়ী, ভদ্র, সজ্জন এবং হক্বের ক্ষেত্রে আপোষহীন। ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দুর্যোগময় মূহুর্তে তিনি এগিয়ে এসেছিলেন সর্বাগ্রে। দ্বীনি বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের তাওহীদবাদী জনতার নেতৃত্ব। ফলশ্রুতিতে তিনি সহ্য করেছেন রিমান্ডের ভয়ানক নির্যাতন, নিপতিত হয়েছেন কারাগারে।
তবুও তিনি সত্য থেকে এক চুল পরিমাণ সরে আসেননি। বরঞ্চ আমার মনে হয়েছে তাঁর ঈমান যেন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও নতুন উদ্যমে নিজেকে সমর্পণ করেছেন উম্মাহ্’র খিদমাহ্য়। তাঁর জীবনের এসব ঘটনা বিশ্লেষণ করলে তাঁকে ‘আপোষহীন’ সম্বোধন করাটা শতভাগ যথার্থ বলে মনে হবে। তাঁর ইন্তেকালে আজ আমরা অভিভাবকশূণ্য হয়ে পড়েছি।
আমি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে হযরতের মাগফিরাহ্ কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারকে জানাই সমবেদনা। একইসাথে শোকে বিহ্বল ছাত্র, সহকর্মী, ভক্ত, অনুসারী তথা উম্মাহর সকল শোকাতুর সদস্যের জন্য সবর কামনা করছি। তাঁর রেখে যাওয়া দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্ব আশা করছি। মহান আল্লহ আমাদের সকল দু’আই শ্রবণ করেন এবং তিনিই একমাত্র দু’আ কবুলকারী-আমীন, ইয়া রব্বাল আ’লামীন।