স্বামীর সাথে স্ত্রীর আচরণ যেমন হওয়া উচিত
নিউজ ডেস্ক, তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩শে জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
রাসুলুল্লাহ (সা:) নারীদের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি ভয়ের কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন অধিকাংশ নারীই জাহান্নামি। তাই নারীদেরকে দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সুন্দর ও নিরাপদ করার অনেক নসিহত পেশ করেছেন। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যত উত্তম ও মধুর হবে, দাম্পত্য জীবনে সুখ ও শান্তি তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। পবিত্র কুরআন-হাদিসের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, উত্তম স্ত্রী হলো তারা, যারা স্বামীকে যথাযথ সম্মান করে। কারণ পরস্পরের প্রতি যথাযথ সম্মানই দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের উপায়। অতঃপর স্বামীর ধন-সম্পদ সংরক্ষণ করার পাশাপাশি নিজেদের (স্ত্রী) সতীত্ব রক্ষায় সতর্ক থাকে। স্বামীর উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিতিতে এ দুটি কাজ স্ত্রীর প্রধান কর্তব্য। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কতটা গাঢ় তার প্রমাণ কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তা’য়ালা তা ঘোষণা করেন-‘তারা তোমাদের পোশাকস্বরূপ এবং তোমরাও তাদের পোশাকস্বরূপ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)
সুতরাং স্ত্রীর উচিত স্বামীর উপস্থিত-অনুপস্থিত সর্বাবস্থায় নিজের ইজ্জত আব্রুর হেফাজত করা। স্বামীর আনন্দে নিজেকে সম্পৃক্ত করা। হাদিসে পাকে এসেছে- রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, ‘উত্তম স্ত্রী হলো সেই; যখন তুমি তার দিকে তাকাও তখন সে তোমাকে আনন্দিত করে। যখন তাকে আদেশ কর তখন সে আনুগত্য করে আর যখন তুমি স্থানান্তরে যাও তখন সে তার ইজ্জত-আব্রু রক্ষা করে এবং সম্পদ হেফাযত করে।’ তাছাড়া যে স্ত্রী ইসলামি শরিয়তের হুকুম-আহকাম মেনে চলে, স্বামীর আনুগত্য করে, তার খেদমত করে এবং নিজের সতীত্ব রক্ষা করে হাদিসে পাকে তার জন্য জান্নাতের সু-সংবাদ দেয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেন, ‘যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, রমজান মাসের রোযা রাখে, লজ্জা স্থানের হেফাজত করে এবং স্বামীর অনুগত থাকে; তাকে বলা হবে- তুমি যে দরজা দিয়ে চাও জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (মুসনাদে আহমদ)
আবার যে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করে না এবং স্বামীর প্রতি অসন্তুষ্ট থাকে তার সম্পর্কে হাদিসে কঠোরভাবে সতর্কতার কথা বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, ‘তার কোনো নামাজ কবুল হয় না, কোনো নেক আমল ওপরে উঠানো হয় না; যতক্ষণ স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট না হবে।’ (ইবনে হিব্বান) স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর আচরণ কেমন হবে তা প্রিয়নবি (সা:) এর সঙ্গে এক নারীর আলাপচারিতায় ফুটে ওঠেছে। হাদিসে এসেছে- হজরত হুসাইন ইবনে মুহসিন থেকে বর্ণিত, তাঁর এক ফুফু প্রিয়নবি (সা:) এর কাছে কোনো প্রয়োজনে এসেছিলেন। তাঁর প্রয়োজন পূর্ণ হলে প্রিয়নবি (সা:) বললেন, তুমি কি বিবাহিতা? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’। প্রিয়নবি (সা:) বললেন, তুমি স্বামীর সঙ্গে কেমন আচরণ করে থাক? তিনি বললেন, আমি একেবারে অপারগ না হলে তার সেবা ও আনুগত্যে ত্রুটি করি না। তখন প্রিয়নবি (সা:) বললেন, ‘স্বামীর সঙ্গে তোমার আচরণ কেমন তা ভেবে দেখো। কারণ স্বামীই তোমার জান্নাত কিংবা জাহান্নাম।’ (মুসনাদে আহমদ)
কুরআন হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্ক দাম্পত্য জীবনে সুখ-শান্তি লাভেই শুধু জরুরি নয় বরং পরকালের সফলতায়ও খুবই জরুরি। তাই পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখা উচিত। বিশেষ করে স্বামীর উপস্থিত ও অনুপস্থিত সর্বাবস্থায় স্বামীর অধিকারগুলো রক্ষা করা স্ত্রীর জন্য আবশ্যক কর্তব্য। আল্লাহ তা’য়ালা মুসলিম উম্মাহর সব স্বামী-স্ত্রীকে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। স্ত্রীদেরকে স্বামীর হকসমূহ যথাযথ রক্ষা করার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন-আমিন।