৩০/১২/২০২৪ ইং
Home / জাতীয় / মৃত্যু আসার আগেই পরকালের প্রস্তুতি

মৃত্যু আসার আগেই পরকালের প্রস্তুতি

মৃত্যু আসার আগেই পরকালের প্রস্তুতি

নিউজ ডেস্ক, তালাশটিভি টোয়েন্টিফোর ডটকম

প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ই জুন ২০২১ খ্রিস্টাব্দ

পবিত্র কুরআনে সূরা মুনাফিকুনের ১০-১১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদের যা দিয়েছি তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় করো। অন্যথায় (মৃত্যু এলে) সে বলবে; হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরো কিছুকাল অবকাশ দিলেন না কেন?

তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। প্রত্যেক ব্যক্তির যখন নির্ধারিত সময় উপস্থিত হবে তখন আল্লাহ্ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা করো, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।’ এখানে এ কথা জেনে রাখা দরকার, মহান আল্লাহ্ সমগ্র বিশে’র স্রষ্টা ও অধিপতি। আকাশ ও তাঁর সৃষ্টি এবং অধিকারভুক্ত। তিনিই সব কিছুর মালিক। তাঁর কোনো কথা, তাঁর কোনো কাজের ওপর কারো কোনো প্রশ্ন করার অধিকার নেই।

পবিত্র কুরআনের সূরা আরাফের ১৭২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্‌ তা’য়ালা বলেছেন, ‘আর যখন তোমার পালনকর্তা বনি আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের ওপর তাদের প্রতিজ্ঞা করালেন, আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই? তারা বলল, অবশ্যই। আমরা অঙ্গীকার করছি; আবার না কিয়ামতের দিন বলতে শুরু করো যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।’

এ কথা জেনে রাখা দরকার, মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা হজরত আদম (আ:) কে সৃষ্টি করার পর তাঁর পৃষ্ঠদেশ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সব বংশধরকে রূহ সৃষ্টি করলেন এবং তাদের জ্ঞান ও বাকশক্তি দিয়ে আল্লাহ্‌ তা’য়ালা রুবুবিয়্যাত তথা আল্লাহ তা’য়ালাই একমাত্র রব (প্রভু)। এ কথার স্বীকৃতি এভাবে নিয়েছেন ‘আলাসতু বি রব্বিকুম’ অর্থাৎ ’আমি কি তোমাদের প্রভু নই’? সব রূহ জবাব দিলো, ‘বালা’, হ্যাঁ অবশ্যই। এ আলমে আরোয়াহ তথা রূহের জগতের স্বীকৃতি থেকে মানবজাতির প্রথম সফর শুরু হয়। ‘আলাসতু’ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতির এটাই সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আর এ কথা চির সত্য যে, জন্ম হচ্ছে মৃত্যুর সংবাদদাতা। আর জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।

পবিত্র কুরআনের সূরা আম্বিয়ার ৩৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্‌ তা’য়ালা বলেছেন, ‘জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে’। এ আয়াতে ‘নফস’বলে পৃথিবীর জীব বোঝানো হয়েছে। আর তাদের সবার মৃত্যু অপরিহার্য। এ ছাড়া সূরা কাফ-এর ১৯ নং আয়াতে আছে, ‘মৃত্যু যন্ত্রণা নিশ্চিত আসবে। এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে।’মৃত্যুর পর মানুষের কিয়ামত শুরু হয়ে যায়। মৃত্যুর পর কোনো মানুষ আর দুনিয়াতে ফেরত আসে না।

পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরীফে মৃত্যুর কষ্ট ও ভয়াবহতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আছে। মহানবী (সা:) ইরশাদ করেছেন, ‘আমার উম্মতের হায়াত ৬০-৭০ বছরের মধ্যে’ (তিরমিজি শরীফ)। বস্তুত দুনিয়ার জীবন আখিরাতের তুলনায় একেবারেই সঙ্কীর্ণ। আর আখিরাতের জীবন অনন্ত, অসীম ও চিরন্তন। প্রতি মুহূর্তে মানুষ মৃত্যু আশঙ্কার সম্মুখীন।’

পবিত্র কুরআনের সূরা আম্বিয়ার ১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্‌ তা’য়ালা বলেছেন, ‘মানুষের হিসাব-কিতাবের সময় নিকটবর্তী, অথচ তারা বে-খবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে’। প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীকে চিন্তা করতে হবে যে, আমার হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, আমার অন্যমনষ্ক কিংবা উদাসীন হওয়া মোটেই সমীচীন হবে না। কেননা উল্লিখিত এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, মানুষের কাছ থেকে তাদের কৃত কর্মের হিসাব নেয়ার দিন ঘনিয়ে এসেছে। এখানে পৃথিবীর বিগত বয়সের অনুপাতে ঘনিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। কারণ, এই উম্মতই হচ্ছে সর্বশেষ উম্মত। যদি ব্যাপক হিসাবে ধরা হয়, তবে কবরের হিসাবও এতে শামিল রয়েছে। প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর পরমুহূর্তেই এই হিসাব দিতে হয়। এ জন্য প্রত্যেকের মৃত্যুকে তার কিয়ামত বলা হয়েছে।

পবিত্র হাদিস শরীফে প্রিয় নবী (সা:) বলেছেন, ‘কবরে মুনকার-নাকির ফেরেশতা তিনটি প্রশ্ন করবে; ১. তোমার রব কে? ২. তোমার দ্বীন কী? ৩. তোমার নবী কে? সত্যিকার মুমিন ব্যক্তি সেই তিনটি প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারবে।’ মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা আমাদের সবাইকে মুনকার-নাকিরের প্রশ্নের জবাবগুলো সঠিকভাবে দেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন-আমিন।

Print Friendly, PDF & Email

About newsdesk

Check Also

আন্দোলনে রাতে বাতি নিভানোর কারিগর চসিকের প্রকৌশলী ঝুলন বরখাস্ত

🕒 জাতীয় ☰ বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ✒️নিজস্ব প্রতিবেদক (চট্টগ্রাম) | নিউজ ডেস্ক- তালাশটিভি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *