‘মা-বাবা-বোন’কে হত্যা করেছি, দেরি হলে স্বামী-সন্তানকেও করবো: ‘৯৯৯’ নম্বরে মেহজাবিন!
প্রকাশিত: রবিবার, ২০শে জুন ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর কদমতলীতে একই পরিবারের (মা-বাবা-বোন) তিনজনকে হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়ে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের পর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত মেহজাবিনকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই ক্ষোভ থেকে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেহজাবিনের স্বামী শফিকের সঙ্গে তার শ্যালিকা জান্নাতুলের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মীর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘শ্যালিকা ও দুলাভাইয়ের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ হয়েছিলো, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তবে, সালিশের পর কী অবস্থা ছিলো, এ ছাড়াও হত্যাকাণ্ডের অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে মেহজাবিন তীব্র ক্ষোভ থেকে খাবারে বিষ মিশিয়ে (বাবা-মা-বোন)কে হত্যা করেছে, এ বিষয়টি আমাদের কাছে স্বীকার করেছে।
দু’জনের সম্পর্কের জেরে পারিবারিক সালিশে কী হয়েছে এ বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে উল্লেখ করে ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার আরও বলেন, ‘সালিশের পর তাদের কী সম্পর্ক ছিলো সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। শফিক এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আমরা তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবো।’
এর আগে শুক্রবার (১৮ই জুন) সকাল ৮টার দিকে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে মেহজাবিন তার (বাবা-মা-বোন)কে খুন করেছে বলে জানান। তাদের উদ্ধার করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আরও দেরি হলে তার স্বামী এবং সন্তানকেও খুন করে ফেলবে। পরবর্তী সময়ে কদমতলী থানাকে এ বিষয়টি অবহিত করা হলে পুলিশ গিয়ে ওই বাসা থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় আহত অবস্থায় আরও দুইজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে মাসুদ রানা (৫০) ও তার স্ত্রী মৌসুমী (৪০) এবং তাদের মেয়ে জান্নাতুল (২০) কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেহজাবিন তার (বাবা-মা-বোন)কে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তবে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে ঘটে যাওয়া এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও কোনও তথ্য লুকিয়ে আছে কিনা এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।