ফরিদপুরে হামলায় ১ জন নিহত, নেপথ্যে ইউপি নির্বাচন!
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ই জুন ২০২১ ইংরেজি
সুমন বিশ্বাস (ফরিদপুর প্রতিনিধি):
ফরিদপুরের মধুখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন জাহাঙ্গীর মিয়া (৪৯) নামের এক ব্যক্তি। গত শনিবার (৫ই জুন) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা সদর থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে তিনি হামলার শিকার হয়ে আহত হন। রাত একটার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে রাতে জাহাঙ্গীরের সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের ঘরবাড়িতে হামলা করে ভাঙ্চুর চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মোঃ জাহাঙ্গীর মিয়া উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের মাকরাইল গ্রামের মোঃ হারুন অর-রশিদের ছেলে। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা। জাহাঙ্গীর মধুখালী রেলগেট এলাকায় গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশের ব্যবসা করতেন।
এলাকাবাসী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দোকান বন্ধ করে একটি রিকশাভ্যানে করে মধুখালীর মাকরাইল আঞ্চলিক সড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলেন জাহাঙ্গীর। তাঁর রিকশাভ্যানটি বাড়ির কাছে পৌঁছালে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল প্রথমে লাঠি দিয়ে জাহাঙ্গীরকে আঘাত করায় তিনি সড়কে পড়ে যান। এরপর হামলাকারীরা তাঁকে লাঠি ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে।
এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুল বশার ও ওয়ালিদ হাসান মামুনের চাচাতো ভাই। তাঁরা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। গত ইউপি নির্বাচনে দু’জনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে হাবিবুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। হেরে যান ওয়ালিদ হাসান মামুন। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার লড়াই শুরু হয় নিহত জাহাঙ্গীর হাবিবুলের সমর্থক। সম্প্রতি জাহাঙ্গীর সহযোগীদের নিয়ে ওয়ালিদের দুই সমর্থককে মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, আগের মারধরের জের ধরে গত শনিবার জাহাঙ্গীরের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। জাহাঙ্গীর মারা গেছেন শুনে রাতে তাঁর সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের ৮ থেকে ১০ সমর্থকের বাড়িতে হামলা করে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।