‘ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি’ আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে!
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১লা জুন ২০২১ ইংরেজি
মোঃ জহিরুল ইসলাম (সিকদার) :
দেশে ‘ফ্রি ফায়ার ও পাবজি’র মতো গেমস বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। তিনি বলেছেন, ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে। যা মাদকের চাইতেও ভয়াবহ। আমাদের প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১লা জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমস বন্ধের দাবিতে স্বেচ্ছাসেবক ‘পথের আলো ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে এসব কথা বলেন তিনি।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ‘ফ্রি ফায়ার আর পাবজি’ গেমস বন্ধে সরকারের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বক্তব্য হতাশাজনক। তার সাম্প্রতিক বক্তব্য সমগ্র জাতিকে হতাশ করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তিনি দেশের জনগণের প্রতিনিধি নন, এই সকল গেম ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি। তিনি জনগণের স্বার্থ নয়, লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের গেমস খেলার ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। অনলাইনে গেম খেলার পাশাপাশি ভার্চুয়ালি অর্থ লেনদেন হচ্ছে এমএমএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি ও পরিবার।’
গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘সম্প্রতি নেপালে ‘পাবজি’ নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল, পরে আবার চালু করা হয়। এ গেমস কাদের স্বার্থে চালু করা হলো?’
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘করোনা মহামারিতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাসের জন্য অভিভাবকরা সন্তানদের হাতে ল্যাপটপ, মোবাইল ডিভাইস তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ সুযোগে তরুণ প্রজন্ম এ গেম দুটির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।’
‘ফ্রি ফায়ার ও পাবজি’ গেমস আসক্তির ভয়াবহতা তুলে ধরতে উদাহরণ দিয়ে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ২১ই মে চাঁদপুরে মামুন (১৪) নামে এক কিশোর মোবাইলের ডেটা কেনার টাকা না পেয়ে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন আগামীর তরুণ প্রজন্মকে সহজলভ্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি, ঠিক তখন আগামী তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিপথগামী হয়েছে, যা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রক কমিশনকে দ্রুততার সহিত এ গেমগুলোর অপব্যবহার বন্ধ এবং প্রযুক্তির ভালো দিক তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।’
‘পথের আলো ফাউন্ডেশন’র আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম সাইফুলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মারুফ সরকারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, স্বেচ্ছাসেবক ‘পথের আলো ফাউন্ডেশন’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মহসীন মুন্সী, মোঃ শাকিল ইসলাম প্রমুখ।