ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করল চীন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
প্রকাশিতঃ সোমবার ১৭ই মে ২০২১ ইংরেজি
ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান সংঘাতে ইসরাইলের পক্ষ নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে নিন্দা করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই ফিলিস্তিনে ইসরাইলি নৃশংসতা অব্যাহত রয়েছে এবং এ বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে মন্তব্য করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই দীর্ঘ কয়েক দশকের এই সংকট নিরসন হচ্ছে না বলেও চীনের অভিযোগ। রোববার চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এসব অভিযোগ আনলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই।
ওয়াং ই বলেন, ‘ওই অঞ্চলে যে সংকট চলছে তা দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে অনেক আগেই তা সমাধান করতে পারত নিরাপত্তা পরিষদ। দুঃখজনক হলেও সত্য, তা এখনও করা যায়নি, আর এর প্রধান কারণ- যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেজন্য ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে কোনো শান্তি চুক্তিতে বার বার ব্যর্থ হয় নিরাপত্তা পরিষদ। আমরা মনে করছি সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই নিরাপত্তা পরিষদের এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া উচিত।’
উল্লেখ্য, চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বাইডেন টেলিফোনে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে বলেছেন, তিনি ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন। হামাস ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রকেট হামলা ঠেকাতে নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে ইসরাইলের।
অন্যদিকে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে রকেট হামলা বন্ধ করতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে টেলিফোনযোগে বলেন বাইডেন। বাইডেনের এই ফোনের পরই গাজায় হামলা আরো জোরদার করে ইসরাইল। যে কারণে বাইডেনের ফোনে ফিলিস্তিনে হামলা উসকে দেওয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গাজা অঞ্চলে ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্ব ও স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন গাজা অঞ্চলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা। তবে বর্তমানে যে সংঘাত চলছে, তার সূত্রপাত ঘটে গত ৯ই মে। ওই দিন ছিল পবিত্র লায়লাতুল কদর রাত।
এদিন জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে কদরের নামাজ আদায় শেষে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করলে উপস্থিত ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর আক্রমণ করে ইসরাইলি সেনারা। এতে অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়। এর জেরে পরদিন থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান বাহিনী লাগাতার গোলাবর্ষণ করতে শুরু করে। এতে বহু ফিলিস্তিনি হতাহত হয়।
পাল্টা জবাব দেয় হামাস। ইসরাইল অভিমুখে সহস্রাধিক রকেট ছুড়ে তারা। গত ৭দিন পর্যন্ত এভাবেই হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৮৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ৫৫ শিশু ও ৩৩ জন নারী।