ঢাকা প্রতিনিধি :
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মোটরসাইকেল নিবন্ধন মাশুল প্রায় অর্ধেক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারি হলেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের (এনটিআর-২) উপ-সচিব শাব্বির আহমেদ স্বাক্ষরিত সম্মতি সংক্রান্ত চিঠি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ফি কমানোর সম্মতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ১০০ সিসি বা এর কম হলে শুধুমাত্র নিবন্ধন ফি পূর্বের ৪ হাজার ২০০ টাকার জায়গায় ২ হাজার টাকা হবে।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ১০০ সিসির উর্ধ্বে হলে শুধুমাত্র নিবন্ধন ফি পূর্বের ৫ হাজার ৬ শত টাকার জায়গায় ৩ হাজার টাকা হবে।
এদিকে ১০০ সিসি বা তার নিচের ইঞ্জিন ক্ষমতার মোটরসাইকেলের নিবন্ধন মাশুলের সঙ্গে এত দিন ভ্যাট ছিল ৬৩০ টাকা, আর ১০০ সিসি বা তার ওপরের সিসির মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে নিবন্ধন মাশুলের সঙ্গে ভ্যাট ছিল ৮৪০ টাকা।
ভ্যাটের হার ঠিকই রয়েছে। তবে নিবন্ধন মাশুল কমায় ভ্যাটও কমবে।
জানা গেছে, মোটরসাইকেল কেনার সঙ্গে নিবন্ধন মাশুল, কর ও মূল্য সংযোজন করসহ (ভ্যাট) যত ধরনের খরচ রয়েছে, প্রতিবেশী সব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে তা চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি। বাংলাদেশ মোটরসাইকেল সংযোজনকারী ও উৎপাদক সমিতি (বিএমএএমএ) বছরের পর বছর ধরে সরকারকে এ কথা জানিয়ে আসছিল। সরকার অবশ্য এবার সমিতিটির কিছু কথা আমলে নিয়ে মোটরসাইকেলের নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) ফি প্রায় অর্ধেক কমাচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ-জাপান যৌথ সরকারি-বেসরকারি অর্থনৈতিক সংলাপ’ শীর্ষক বৈঠকে মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ফি বাজার মূল্যের ১০ শতাংশের মধ্যে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে জাপানি রাষ্ট্রদূত শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে মোটরসাইকেল নিবন্ধন খরচ কমানোর প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশ মোটরসাইকেল সংযোজনকারী ও উৎপাদক সমিতি (বিএমএএমএ) জানিয়েছে, ১১০ সিসির একটি মোটরসাইকেলের মাশুল বাংলাদেশে ২২ হাজার ২৮৪ টাকা। ভারতে তা ৩ হাজার ৮৭৯ টাকা, শ্রীলঙ্কায় ৪ হাজার টাকা, পাকিস্তানে ২ হাজার ৬৮ টাকা, মিয়ানমারে ৩ হাজার ৩২০ টাকা এবং মালয়েশিয়ায় ১ হাজার ১৩২ টাকা।
বিএমএএমএ বলছে, নিবন্ধন মাশুলের পাশাপাশি ডিজিটাল সনদ, সম্পূরক শুল্ক, ডিজিটাল নম্বরপ্লেট, পরিদর্শন মাশুল, সড়ক কর (রোড ট্যাক্স) ইত্যাদি খরচ রয়েছে। ৯০ হাজার টাকার মোটরসাইকেলের মাশুল ২৩ শতাংশ অর্থাৎ ২০ হাজার ৯৩৭ টাকা। আর ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মোটরসাইকেলে ১৮ শতাংশ অর্থাৎ ২২ হাজার ৭৮৯ টাকা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, করোনার কারণে চলাচল সীমিত থাকলেও গত বছর সারা দেশে ৩ লাখ ১১ হাজার ১৬টি মোটরসাইকেল নিবন্ধন নিয়েছেন গ্রাহকরা। যেখানে ২০১৯ সালে নিবন্ধন নেয়া হয়েছে ৪ লাখ ১ হাজার ৪৫২টির। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে যথাক্রমে এই সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪৫ ও ৩ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৬টি।